ভক্তি ও ভজনতত্ত্ব
ভক্তি ও ভজনতত্ত্ব
![]() |
উপমা মহানামব্রতস্য'-১ম খন্ড |
🌷ভক্তিপথে শ্রীকৃষ্ণভজনের একটি অপূর্ব্ব ফল এই যে, শ্রীকৃষ্ণচরণ সেবা-বাসনা ছাড়াই অন্য লৌকিক বিষয়ের কামনাযুক্ত হৃদয় লইয়াও যদি কেহ কৃষ্ণ ভজনা করে, তাহা হইলেও পরম কারুণিক শ্রীকৃষ্ণ অশেষ কৃপাপরবশ হইয়া তাহার অন্তর হইতে অন্যবস্তুর ভোগ লালসা দূর করিয়া দিয়া নিজ শ্রীচরণ-সরোজে টানিয়া লন ।অবোধ শিশু পিতামাতার কাছে কত কি চায়। চাইলেই তাহারা তাহা দেন না। যাহা দিলে শিশুর কল্যাণ হইতে পারে, পিতামাতা তাহাই দেন।
🌷শ্রীকৃষ্ণের পাদপদ্মের মাধুর্য্য- কণিকার আস্বাদন পাইলেই ভক্ত তাহার প্রার্থিত বিষয়-সুখের তুচ্ছতা বুঝিতে পারে। তখন আর তাহাতে লোভ থাকে না। লোভ জাগে তখন কৃষ্ণ সেবার জন্য। ইহার উজ্জ্বল উপমা হিসেবে ধ্রুব মহারাজের কথা বলছেন-
🌷ধ্রুব বিষয় সুখের জন্য অর্থাৎ পিতৃ-সিংহাসন পাইবার আশায় পদ্ম- পলাশলোচন শ্রীহরির ভজনা করিয়াছিলেন। পঞ্চম বর্ষীয় শিশুর আর্ত্তিপূর্ণ ডাকে বিচলিত হইয়াছেন। কিন্তু ধ্রুব-হৃদয়ে বিষয়-বাসনা থাকায় শ্রীহরি তাঁহার নিকট আসিতে পারিতেছেন না। শ্রীহরি তখন নারদকে পাঠাইলেন। নারদ ধ্রুবকে কৃপা করিলেন। তাহার হৃদয়ে শ্রীহরির মাধুর্য্য ক্রমে বিকাশ পাইতে লাগিল । শ্রীহরি তখন ধ্রুবকে দর্শন দিয়া কহিলেন— "ধ্রুব বর লও।" নারদের কথায় ও শ্রীহরির মাধুর্য্যে উহার চিত্তের সকল মলিনতা ও বিষয়-বাসনা দূর হইয়াছে । ধ্রুব তখন বলিলেন—স্বামিন্, সামান্য কাঁচ খুঁজিতেছিলাম, কিন্তু ভাগ্যক্রমে মহামূল্যবান রত্ন পাইয়াছি।রাজপদ চাহিতে গিয়া তোমার অভয়পদ মিলিয়াছে । এখন আর অন্য কিছু বর চাহি না।